আহমাদশাহ আবদালি এক মহান শাসক ও সামরিক নেতৃত্বের প্রতীক। ভারতীয় উপমহাদেশে এবং মধ্য–এশিয়ায় তাঁর নাম ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৮ শতকের মাঝামাঝিতে তিনি যে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন, তা কেবল আফগানিস্তানের ভিত্তিই স্থাপন করেনি; বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের গতিপথও বদলে দেয়। তবে তাঁর জীবনের ওপর পর্যাপ্ত তথ্য ও সুনির্দিষ্ট জীবনী রচিত না হওয়ায় ইতিহাসের এই মহান ব্যক্তি সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা ও প্রোপাগান্ডা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় মিডিয়া ও সিনেমায় তাঁকে অত্যন্ত নেতিবাচক ও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে করে ভারতীয় সমাজে আহমাদশাহ সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আহমাদশাহের শাসনামলের অন্যতম কৃতিত্ব ছিল আফগান গোত্রগুলোকে একত্রিত করে দুররানি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা। ১৭৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কান্দাহারে আফগান উপজাতি প্রধানদের একত্রিত করে নিজেকে নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। সাম্রাজ্যটি বর্তমান আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরান এবং ভারতের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আহমাদশাহ দুররানির সামরিক দক্ষতা ছিল তাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ভারতীয় উপমহাদেশে তাঁর সামরিক অভিযানগুলো ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে ১৭৬১ খ্রিষ্টাব্দের পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ। এ যুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে মারাঠা সাম্রাজ্যের চূড়ান্ত পতন ঘটে এবং ভারতীয় উপমহাদেশে আফগানদের প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হয়।