শাসকের সামনে সত্য উচ্চারণের ইতিহাস
শক্তিমান উর্দু সাহিত্যিক আবাদ শাহপুরির কালজয়ী এই রচনায় ফুটে উঠেছে ইতিহাসের এমন কিছু সত্যনিষ্ঠ ঘটনা, যা ইমানকে করে তরতাজা। পাঠকের
কারাগারের রাতদিন
১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে মিসরের ইসলামি আন্দোলনের সর্বোচ্চ নেতা ইমাম হাসান আল বান্নাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে শহিদ করা হয়। ইখওয়ানের পুরো নেতৃত্বকে কারাবরণ, নির্যাতন, গুপ্তহত্যা, ফাঁসি ও নির্বাসনের মাধ্যমে নির্মূল করা হয়। বহু নিরপরাধ ইখওয়ানিকে নাসিরের কারাগারে বন্দি করা হয়। কথিত মুসলিম দাবিদারদের দ্বারা হাজার হাজার নিরীহ মানুষের ওপর যে অপমান, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালানো হয়, তা মিসরের আধুনিক ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায়। নব্য মুসলিম শাসকদের বর্বরতা তাদের ঔপনিবেশিক প্রভুদেরও ছাড়িয়ে যায়। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটিকে একধরনের জীবনীগ্রন্থই বলা যায়। এখানে জায়নাব আল গাজালির কারাবাসের বেদনাদায়ক ঘটনাগুলো উঠে এসেছে। কারাগারের স্মৃতিচারণ নিয়ে এটি যুগান্তকারী এক গ্রন্থ। সেই লাখ লাখ মানুষের জন্য গ্রন্থটি অনুপ্রেরণা ও নির্দেশনার আকর, যাঁরা ইসলামকে সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করতে চান, ইসলামকে বানাতে চান মানবজাতির জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধির উৎস। এই অসহায় অথচ গুণী নারীর ওপর যে ধরনের বর্বরতা ও নিপীড়ন চালানো হয়েছিল, তা সকল কল্পনার বাইরে। শুধু মানুষই তাঁর ওপর নির্যাতন চালায়নি, নির্যাতন চালাতে ব্যবহৃত হয়েছে কুকুর, সাপ ও ইঁদুর। অথচ তিনি কোনো অপরাধী নন; বরং তিনি এমন এক নারী, যিনি অত্যন্ত পুণ্যবান, সদাচারী, ধার্মিক ও বিনয়ী। সভ্য দুনিয়ার মানুষজন কল্পনাও করতে পারবে না যে, তাদেরই সমকালে একটি দেশের সরকারি কর্মকর্তারা সে দেশের নাগরিকদের সঙ্গে এমন ঘৃণ্য আচরণ করছে।
রহস্যময় বিপ্লবী
আবদুল্লাহ গালিব আল বারগুসি হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জুদ্দিন আল কাসসাম ব্রিগেডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। দ্বিতীয় ইনতিফাদায় তিনি হয়ে ওঠেন এক দুর্ধর্ষ পরিকল্পক, যাঁর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হামলায় নিহত হয় ৬৬ জন দখলদার, আহত হয় প্রায় ৫০০ জন। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে তিনি গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তিনি ইরসরাইলের গিলবোয়া কারাগারে বন্দি, যেখানে চলছে নির্বিচার শারীরিক ও মানসিক নিপীড়ন। কিন্তু এই অমানুষিক বন্দিত্বেও তাঁর হৃদয়ের দীপশিখা নিভে যায়নি। কারাগারের অন্ধকার কুঠুরিতে বসে তিনি একদিন পান তাঁর মেয়ে তালার লেখা একটি চিঠি—ভালোবাসা ও প্রশ্নে পূর্ণ। সেই চিঠির উত্তরে তিনি কলম ধরেন, যা রূপ নেয় এক বিস্ময়কর গ্রন্থে—রহস্যময় বিপ্লবী। এই বই কেবল তাঁর আত্মজীবনের বয়ান নয়; বরং এক মুজাহিদের অন্তর্লোকের দরজা খুলে দেওয়া এক ব্যতিক্রমী দলিল। এতে তিনি বলেছেন তাঁর শৈশব, প্রবাস, প্রযুক্তি–অভিযাত্রা, প্রতিরোধযুদ্ধ, বন্দিত্ব ও এক পিতার হৃদয়ের অনুভূতির কথা। বইটি এমন এক আত্মজীবনকথা, যা পাঠকের মনে জাগিয়ে তোলে ইমানি চেতনা, রক্তে ছড়িয়ে দেয় আত্মত্যাগের গর্ব আর চোখে জ্বেলে দেয় প্রতিরোধের আগুন। আবদুল্লাহ বারগুসি আজও শত্রুর শেকলবন্দি। কিন্তু তাঁর কলম, তাঁর চিন্তা এবং তাঁর আত্মত্যাগ আজ স্বাধীনতার আর্তনাদ হয়ে আছড়ে পড়ে দুনিয়ার প্রতিটি নিপীড়িত হৃদয়ে। রহস্যময় বিপ্লবী—এক বাবার ভালোবাসামাখা উত্তর; কিন্তু সেটি হয়ে উঠেছে একটি জাতির সাহস ও সংগ্রামের জ্বলন্ত উপাখ্যান।
বিশ্বাসঘাতকদের ইতিহাস-২
ইতিহাস সাক্ষী, যুগে যুগে ইসলাম ও উম্মাহর ক্ষতিসাধনে কাফির-মুশরিকরা যতটা-না ক্ষতি করেছে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে গাদ্দার-মুনাফিকরা। নবিযুগের উবাই
আন্দালুসের ইতিহাস (দুই খণ্ড)
মুসলিমদের হাজার বছরের শিক্ষা–সভ্যতা– সংস্কৃতির বাতিঘর ছিল এই আন্দালুস, যা আজকের গোটা স্পেন এবং পর্তুগালের একাংশে পড়েছে। টানা ৮০০ বছর তাঁরা শাসন করেছেন এই দেশ, করেছেন একে দুনিয়ার সবচেয়ে অগ্রসর জনপদ। আন্দালুস যখন বৈদ্যুতিক আলোয় তারার হাটের মতো ঝলমল করছে, ইউরোপ তখন অন্ধ ভিখিরির মতো ছড়ি হাতে নিয়ে পথ হাতড়াচ্ছে; আর আমেরিকা তখনো ডিম ফুটে বেরোয়নি। তাই আন্দালুস নিল দুনিয়াকে পথ দেখাবার দায়—বিজ্ঞানে, গণিতে, ধর্মতত্ত্বে, দর্শনে, শিল্পে, স্থাপত্যে, সাহিত্যে, অর্থনীতিতে, রাজনীতিতে, নগরায়নে। সুদীর্ঘ এ সময়ে আন্দালুস বহু রাজ–রাজত্বের দেখা পায়। তবে কখনোই তা নিস্তরঙ্গ নিরাপদ ছিল না; সংঘবদ্ধ খ্রিষ্টশক্তির সঙ্গে মুসলিমদের লড়াই–সংগ্রাম লেগেই ছিল। এই নিরবচ্ছিন্ন দ্বন্দ্ব–সংঘাতের শেষ পর্যায়ে ইউরোপীয়রা যখন মুসলিমদের থেকে ছিনিয়ে নেয় আন্দালুস, মূলত তখন থেকেই ইউরোপে উন্নতির সূচনা ঘটে। আন্দালুসে মুসলিম শাসনের বিলুপ্তি ঘটেছিল এক সংকটময় যুগসন্ধিক্ষণে। দীনি–দুনিয়াবি নানা অনুঘটক প্রশস্ত করেছে পতনের পথ। অভ্যন্তরীণ বিবাদ ছিল, রাজকীয় বিলাস ছিল, জিহাদে অনীহা ছিল, গোত্রীয় স্বজনপ্রীতি ছিল, গৃহযুদ্ধ ছিল, বিশ্বাসঘাতকতা ছিল এবং খ্রিষ্টানদের সঙ্গে আঁতাতের মতো লজ্জাজনক ঘটনাও ছিল। এসবেরই পরিণামে অগণিত মুসলিমকে হত্যা করা হয়, বেঁচে যাওয়াদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় আফ্রিকায়।
জৈন্তিয়া রাজ্যের ইতিকথা
রহস্য-রূপকথা আর বিস্মৃতির আড়ালে চাপা পড়া এক অদ্ভুত রাজ্যের নাম জৈন্তিয়া। অদ্ভুত সুন্দর আর বিস্ময়কর সব উপাদানে ভরপুর এই রাজ্যের
সোনালি দিনের গল্প
উসমানি খিলাফতের ইতিহাস এক মাজলুম ইতিহাস। পশ্চিমারা উসমানি খিলাফতকে দাফন করেই ক্ষান্ত হয়নি; উম্মাহর গৌরবের প্রতীক এই খিলাফতের প্রকৃত ইতিহাস
ফাতিমি সাম্রাজ্যের ইতিহাস
গ্রন্থটিতে মূলত ইতিহাসে ফাতিমি নামে পরিচিত উবায়দি রাফিজি সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের আলোচনা করা হয়েছে। মূলে তারা শিয়া ছিল বিধায় আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে
সিসাঢালা প্রাচীর
পাহাড়ঘেরা আশ্চর্য এক দেশ আফগানিস্তান—এশিয়া-ইউরোপের সদর দরজা। আরও আশ্চর্য সেই দেশের মানুষ—উদার, অকুতোভয়, আলখাল্লা-পাগড়ি-শ্মশ্রু-শোভিত এবং অতিমাত্রায় স্বাধীনচেতা। ইতিহাসের যে অপ্রতিরোধ্য
মুসলিম বিশ্বে আধুনিকতাবাদ ও তার প্রবক্তারা
মুসলিম সমাজে ধর্মীয় পরিসরে আধুনিকতাবাদী বলতে এমন লোককে বোঝায়, যিনি শেষ নবি মুহাম্মাদ সাঃ-এর আনীত এবং স্বীকৃত ইসলামের প্রতি বিরাগভাজন