সোগুত—মহাবীর এরতুগরুল গাজিকে দেওয়া সুলতান আলাউদ্দিন কায়কোবাদের ছোট্ট এক জায়গির। একসময়ের এই ছোট্ট জায়গিরটি পুরো এশিয়া মাইনর, পশ্চিম এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা আর উত্তর-পূর্ব ইউরোপের মোট ২৯টি প্রদেশ নিয়ে প্রায় ৫২ লাখ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃতি লাভ করেছিল; যে সীমানায় ছিল পৃথিবীর বর্তমান মানচিত্রের প্রায় ৪২টি দেশের অবস্থান।
মহাবীর এরতুগরুল গাজির দেখানো পথে তাঁরই পুত্র উসমান গাজির নেতৃত্বে ১২৯৯ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান তুরস্কের আনাতোলিয়ায় ভিত প্রতিষ্ঠিত হয় উসমানি সাম্রাজ্যের। পরবর্তীকালে যা ইতিহাসের প্রস্তরপাতায় ‘উসমানি খিলাফত’ নামে চিরভাস্বর হয়ে যায়।
উসমানি খিলাফত ছিল ইসলামের ইতিহাসে একটি দীর্ঘমেয়াদী—বৃহৎ, প্রভাবশালী ও শেষ ইসলামি খিলাফত। শক্তিশালী এ মুসলিম সাম্রাজ্যের ভয়ে তদানীন্তন অপরাপর সাম্রাজ্যগুলো কাঁপত থরথর করে! আমেরিকা ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো পর্যন্ত কর প্রদান করত!
পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, আমরা এই খিলাফতের বিভিন্ন যুদ্ধকাহিনি জানতে পারলেও খিলাফতের সোনাফলা মাটি-প্রকৃতি, সোনালি দিন-রাত আর সোনার সেই মানুষগুলো সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না!
সুদীর্ঘ ছয় শতাধিক বছর ঐশী বিধানে পরিচালিত একটি সাম্রাজ্য, একটি জাতি, এক বিশাল সমাজের অবস্থা আর কতগুলো সোনার মানুষের সোনালি জীবনব্যবস্থা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গ্রন্থটিতে। বলা যায়, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব সত্য ও বিক্ষিপ্ত ইতিহাস, ইমানদীপ্ত, চমকপ্রদ ও শিক্ষণীয় কাহিনীর অনবদ্য সংকলন—উসমানি খিলাফতের স্বর্ণকণিকা।
লেখক | : | |
---|---|---|
প্রকাশক | : | কালান্তর প্রকাশনী |
কোয়ালিটি | : | হার্ডকভার |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | : | ১৬০ |
প্রচ্ছদ | : | নওশিন আজাদ |
প্রকাশকাল | : | একুশে গ্রন্থমেলা, ২০১৮ |
সংস্করণ | : | একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১ |
ISBN | : | 978 984 90473 3 9 |
ক্যাটাগরি | : | ইতিহাস |
রেটিং | : |
1 review for উসমানি খেলাফতের স্বর্ণকণিকা
#কালান্তর_ওয়াফিলাইফ_রিভিউ_প্রতিযোগিতা
বুক রিভিউ
বইয়ের নাম ঃ উসমানি খেলাফতের স্বর্ণকণিকা
লেখক ঃ আইনুল হক কাসিমী
বিষয় ঃ ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য
প্রথম প্রকাশ ঃ একুশে বইমেলা, ২০১৮
প্রকাশনী ঃ কালান্তর
মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০৳
পৃষ্ঠা সংখ্যা ঃ ১৫০
রেটিং ঃ ৮.৫/১০ইতিহাসের পাতায় সময় তখন ১২৫৮ সাল। যে বছর মোঙ্গল নেতা হালাকু খান কর্তৃক ধ্বংস হয় আব্বাসীয় খিলাফতের রাজধানী বাগদাদ শহরের। বাগদাদের পতনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে ৫০৮ বছরের বায়োবৃদ্ধ আব্বাসীয় খিলাফতের। কিন্তু যেই বছর ইরাকে আব্বাসীয় খিলাফতের পতন ঘটে ঠিক সেই বছরই পশ্চিম আনাতোলিয়ায় আরতুগ্রুল গাজি ও হালিমা সুলতানার ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন তাদের তৃতীয় সন্তান। নাম উসমান বিন আরতুগ্রুল। সেই সময় কে জানতো যে এই ছোট শিশুটিই একসময় বড় হয়ে গড়ে তুলবে এক মহান সাম্রাজ্যের!! যেই সাম্রাজ্যের মোট ৩৭ জন শাসক ৬২৫ বছর ব্যাপী এশিয়ার মাইনর, গোটা আনাতোলিয়া, বলকান, ককেশাস অঞ্চল, দক্ষিণ আফ্রিকা, পূর্ব প্রাচ্য, উত্তর পূর্ব ইউরোপসহ পৃথিবীর ৪২ টি দেশ নিয়ে প্রায় ৫২ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা শাসন করেছিলো। এই সাম্রাজ্যের নাম উসমানীয় সাম্রাজ্য বা অটোমান এম্পায়ার।
বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ও ঐতিহাসিক ইবনে খালদুনের মতে, ” যেকোনো সাম্রাজ্যের স্থিতিকাল একশ বছর। তার পর সেই সাম্রাজ্যের পতন ঘনিয়ে আসে। ”
কিন্তু উসমানীয় সাম্রাজ্যের বেলায় তেমনটা ঘটে নি। অটোমান সাম্রাজ্যের বিশাল গগনচুম্বি সফলতার মূল কারণ ছিল আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রদত্ত জীবন বিধান ইসলাম। অটোমান সাম্রাজ্যের প্রায় সকল সুলতান ই আল্লাহর এই বিধানকে আকঁড়িয়ে ধরে তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেন।
অটোমান সাম্রাজ্যের স্থায়ীত্বের মূল ভিত্তি ছিলো ঈমান, ইসলাম ও ন্যায়বিচার। এই ” উসমানীয় খিলাফতের স্বর্ণকণিকা ” বইটি আপনি পাঠ করলে উসমানীয় সাম্রাজ্যের ন্যায় বিচার, শাসকদের খোদাভীরুতা, দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা, একই অঞ্চলে ইহুদি, খ্রিস্টান, মুসলমান এর সমতা রক্ষা করা, দ্বীনের প্রতি সুলতানদের একনিষ্ঠতা, মুসলিম রাষ্ট্রে অমুসলমানদের সর্বোচ্চ মানবাধিকার রক্ষায় সুলতানদের প্রচেষ্টা ইত্যাদি জানতে পারবেন। কিভাবে ছোট একটা জায়গির থেকে ইসলামের প্রতি অগাধ বিশ্বাস নিয়ে একটা বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা যায় এবং একটা বিশাল সাম্রাজ্যের সুলতান হয়েও কিভাবে সাধামাটা জীবন উপভোগ করা যায় তা এই বইয়ে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ইসলামের উপর আঘাত আসলে কিভাবে দ্বীনকে কঠোর হস্তে রক্ষা করতে হয় এবং কিভাবে যুদ্ধের ময়দানেও শত্রুকে সুন্দর আচার ব্যবহার দ্বারা প্রভাবিত করা যায়, একটি সমাজ কিভাবে চলা উচিত, রাষ্ট্র কিভাবে চলা উচিত, মুসলিম রাষ্ট্রে অমুসলমানদের প্রতি সুলতান ও সেই রাষ্ট্রের জনগনের কী কী কর্তব্য, দূর্বলের প্রতি সবলের ব্যবহার, গরীবের প্রতি ধনীর আচরণ এর অসাধারণ সব বর্ণনা পাবেন এই বইয়ে।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো,
উসমানীয় সাম্রাজ্য নিয়ে পশ্চিমা গবেষকরা অনেক মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ও বিকৃত ইতিহাসের আশ্রয় গ্রহণ করে। অনেক সুলতানদের তারা ক্ষমতালোভী, নারী লোভী, লম্পট, অত্যাচারী, বর্বর, রক্তপিপাসু ইত্যাদি বলে অবিহিত করে থাকে। কিন্তু তাদের এই প্রপাগাণ্ডাগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট প্রমাণিত হবে এই বইটি ভালোভাবে অধ্যয়ন করলে ।
ইসলামের বীরত্বগাঁথা ইতিহাস ও হারানো ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক অজানা জিনিস জানতে বইটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।** তাই আপনি যদি উসমানীয় সাম্রাজ্য সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আপনার উচিত সর্বপ্রথম এই বইটি পড়া। এই বইয়ের উসমানীয় সাম্রাজ্য নিয়ে একটা সুন্দর ধারণা পাবেন যা আপনাকে উসমানীয়দের ইতিহাস জানতে আরও আগ্রহী করে তুলবে। বইটা একবার পড়া শুরু করলে একদম শেষ না করে টেবিল থেকে উঠতে মন চাইবে না
বইটি আপনারা পাবেন রকমারি.কম, কালান্তর প্রকাশনীর নিজস্ব পেইজ , ওয়াফিলাইফ.কম সহ আপনাদের নিকটস্থ অভিজাত লাইব্রেরিগুলোতে।
— মাহমুদ রেজা খান নকীব
Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.
Mahmud Reza Khan Nakib –
#কালান্তর_ওয়াফিলাইফ_রিভিউ_প্রতিযোগিতা
বুক রিভিউ
বইয়ের নাম ঃ উসমানি খেলাফতের স্বর্ণকণিকা
লেখক ঃ আইনুল হক কাসিমী
বিষয় ঃ ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য
প্রথম প্রকাশ ঃ একুশে বইমেলা, ২০১৮
প্রকাশনী ঃ কালান্তর
মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০৳
পৃষ্ঠা সংখ্যা ঃ ১৫০
রেটিং ঃ ৮.৫/১০
ইতিহাসের পাতায় সময় তখন ১২৫৮ সাল। যে বছর মোঙ্গল নেতা হালাকু খান কর্তৃক ধ্বংস হয় আব্বাসীয় খিলাফতের রাজধানী বাগদাদ শহরের। বাগদাদের পতনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে ৫০৮ বছরের বায়োবৃদ্ধ আব্বাসীয় খিলাফতের। কিন্তু যেই বছর ইরাকে আব্বাসীয় খিলাফতের পতন ঘটে ঠিক সেই বছরই পশ্চিম আনাতোলিয়ায় আরতুগ্রুল গাজি ও হালিমা সুলতানার ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন তাদের তৃতীয় সন্তান। নাম উসমান বিন আরতুগ্রুল। সেই সময় কে জানতো যে এই ছোট শিশুটিই একসময় বড় হয়ে গড়ে তুলবে এক মহান সাম্রাজ্যের!! যেই সাম্রাজ্যের মোট ৩৭ জন শাসক ৬২৫ বছর ব্যাপী এশিয়ার মাইনর, গোটা আনাতোলিয়া, বলকান, ককেশাস অঞ্চল, দক্ষিণ আফ্রিকা, পূর্ব প্রাচ্য, উত্তর পূর্ব ইউরোপসহ পৃথিবীর ৪২ টি দেশ নিয়ে প্রায় ৫২ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা শাসন করেছিলো। এই সাম্রাজ্যের নাম উসমানীয় সাম্রাজ্য বা অটোমান এম্পায়ার।
বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ও ঐতিহাসিক ইবনে খালদুনের মতে, ” যেকোনো সাম্রাজ্যের স্থিতিকাল একশ বছর। তার পর সেই সাম্রাজ্যের পতন ঘনিয়ে আসে। ”
কিন্তু উসমানীয় সাম্রাজ্যের বেলায় তেমনটা ঘটে নি। অটোমান সাম্রাজ্যের বিশাল গগনচুম্বি সফলতার মূল কারণ ছিল আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রদত্ত জীবন বিধান ইসলাম। অটোমান সাম্রাজ্যের প্রায় সকল সুলতান ই আল্লাহর এই বিধানকে আকঁড়িয়ে ধরে তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেন।
অটোমান সাম্রাজ্যের স্থায়ীত্বের মূল ভিত্তি ছিলো ঈমান, ইসলাম ও ন্যায়বিচার। এই ” উসমানীয় খিলাফতের স্বর্ণকণিকা ” বইটি আপনি পাঠ করলে উসমানীয় সাম্রাজ্যের ন্যায় বিচার, শাসকদের খোদাভীরুতা, দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা, একই অঞ্চলে ইহুদি, খ্রিস্টান, মুসলমান এর সমতা রক্ষা করা, দ্বীনের প্রতি সুলতানদের একনিষ্ঠতা, মুসলিম রাষ্ট্রে অমুসলমানদের সর্বোচ্চ মানবাধিকার রক্ষায় সুলতানদের প্রচেষ্টা ইত্যাদি জানতে পারবেন। কিভাবে ছোট একটা জায়গির থেকে ইসলামের প্রতি অগাধ বিশ্বাস নিয়ে একটা বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা যায় এবং একটা বিশাল সাম্রাজ্যের সুলতান হয়েও কিভাবে সাধামাটা জীবন উপভোগ করা যায় তা এই বইয়ে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ইসলামের উপর আঘাত আসলে কিভাবে দ্বীনকে কঠোর হস্তে রক্ষা করতে হয় এবং কিভাবে যুদ্ধের ময়দানেও শত্রুকে সুন্দর আচার ব্যবহার দ্বারা প্রভাবিত করা যায়, একটি সমাজ কিভাবে চলা উচিত, রাষ্ট্র কিভাবে চলা উচিত, মুসলিম রাষ্ট্রে অমুসলমানদের প্রতি সুলতান ও সেই রাষ্ট্রের জনগনের কী কী কর্তব্য, দূর্বলের প্রতি সবলের ব্যবহার, গরীবের প্রতি ধনীর আচরণ এর অসাধারণ সব বর্ণনা পাবেন এই বইয়ে।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো,
উসমানীয় সাম্রাজ্য নিয়ে পশ্চিমা গবেষকরা অনেক মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ও বিকৃত ইতিহাসের আশ্রয় গ্রহণ করে। অনেক সুলতানদের তারা ক্ষমতালোভী, নারী লোভী, লম্পট, অত্যাচারী, বর্বর, রক্তপিপাসু ইত্যাদি বলে অবিহিত করে থাকে। কিন্তু তাদের এই প্রপাগাণ্ডাগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট প্রমাণিত হবে এই বইটি ভালোভাবে অধ্যয়ন করলে ।
ইসলামের বীরত্বগাঁথা ইতিহাস ও হারানো ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক অজানা জিনিস জানতে বইটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
** তাই আপনি যদি উসমানীয় সাম্রাজ্য সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আপনার উচিত সর্বপ্রথম এই বইটি পড়া। এই বইয়ের উসমানীয় সাম্রাজ্য নিয়ে একটা সুন্দর ধারণা পাবেন যা আপনাকে উসমানীয়দের ইতিহাস জানতে আরও আগ্রহী করে তুলবে। বইটা একবার পড়া শুরু করলে একদম শেষ না করে টেবিল থেকে উঠতে মন চাইবে না
বইটি আপনারা পাবেন রকমারি.কম, কালান্তর প্রকাশনীর নিজস্ব পেইজ , ওয়াফিলাইফ.কম সহ আপনাদের নিকটস্থ অভিজাত লাইব্রেরিগুলোতে।
— মাহমুদ রেজা খান নকীব