বইটি সম্পর্কে বেশি কিছু বলব না; সামান্য ইংগিত দিচ্ছি মাত্র। বাংলা ভাষায় রচিত-অনূদিত বইয়ের অভাব নেই; অভাব শুধু দিকনির্দেশকারী বইয়ের। অভাব দিশেহারা উদ্ভ্রান্ত তরুণদের খোরাক জোগানোর মতো বইয়ের। অভাব সঠিক আকিদা, মানহাজ, মাসলাক ও আদর্শের প্রতি উদ্বুদ্ধকারী বইয়ের। অভাব দীন প্রতিষ্ঠায় ব্যাকুল তরুণ-যুবাদের গাইড দেওয়ার মতো বইয়ের; কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন এমন অভাব? কেন এতদিনেও ঘুচল না এ অভাব? এই অনেকগুলো কেন’র একটি উত্তর—কলমসৈনিকদের সাহস এবং দৃষ্টিভঙ্গিজনিত অপূর্ণতা।
এই বইটি এসবের একটা গাইডলাইন হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। আমরা বিশ্বাস করি, বইটি চিন্তার নতুন দুয়ার খুলে দেবে। যেসব বিষয়ে কাজ করা দূরের কথা; কল্পনা করতেও মানুষ ভুলে গেছে, সেসব বিষয় নিয়ে ভাবতে শুরু করবে। যেমন : তাওহিদের মূল শিক্ষা, কালিমার মর্ম, সহিহ আকিদা, জিহাদ, বিজয়, বাইতুলমাল, ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা, আল-ওয়ালা ওয়াল-বারা, নব্যক্রুসেড, হাকিমিয়্যাহ, ভিসা, আধুনিক জাহিলিয়াত, জাতীয়তাবাদ, রিদ্দার ফিতনা, তাকফির, খারেজি ও সাহায্যপ্রাপ্ত জামাআত ইত্যাদি।
লেখক তার কলমের আঁচড়ে দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছেন এসব বিষয় ছাড়াও আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেহেতু অনালোচিত বা স্বল্পালোচিত এসব বিষয় এবং এসবের পরিভাষাও অনেক ক্ষেত্রে জটিল ও কঠিন, তাই কোনো কোনো জায়গায় নতুন বা অনভ্যস্ত পাঠক খানিকটা হোঁচট খেতে পারেন। তাদের জন্য সংশ্লিষ্ট আলোচনাগুলো একাধিকবার পড়ার ও হৃদয়ঙ্গম করার অনুরোধ থাকবে। তবে অভ্যস্ত ও মনোযোগী পাঠকের জন্য তেমন কষ্ট হবে না ইনশাআল্লাহ।
Naeem adnan –
বই-মুক্ত প্রাণের হে সন্ধানী
লেখক-
পৃষ্ঠা -২১৬
মূল্য-২৮৪(মুদ্রিত)
বাঁধাই -হার্ড কভার
প্রকাশনী –
————————————–
মাঝে মাঝে হৃদয় যুদ্ধের জন্য হাহাকার করে ওঠে
মনে হয় রক্তই সমাধান,বারুদই অন্তিম তৃপ্তি
আমি তখন স্বপ্নের ভেতর জেহাদ,জেহাদ বকে জেগে উঠি।
——–আল মাহমুদ
বিশ্বাস সঠিক হোক কিংবা ভ্রান্ত,সে এক মহা শক্তি।
বিশ্বাসের পারস্পারিক সংঘাতে সভ্যতার শুরু থেকে এ যাবৎ যে পরিমাণ রক্তবন্যা বয়ে গেছে,ভূমিদখল কিংবা শক্তির উন্মত্ত মহড়া প্রদর্শনে বয়নি তার সিকিভাগও।
বিশ্বাস প্রধানত তিন প্রকার।
তাওহিদ,শিরক ও নাস্তিক্যবাদ।
কিন্তু নাস্তিক্যবাদের স্বল্পতার কারণে দুই প্রকার।
আমাদের ধর্ম ইসলাম ধারণ করেছে তাওহীদ।
আর পৃথিবীর তাবৎ ধর্ম ও নাস্তিক্যবাদ গ্রহণ করেছে কুফর।
তাই ইসলামের শুরু থেই চলে আসছে তাওহীদ ও কুফরের সংঘাত।
বাংলাভাষায় রচিত – অনূদিত বইয়ের অভাব নেই।
অভাব শুধু দিক নির্দেশনাকারী বইয়ের।
অভাব দিশেহারা উদ্ভ্রান্ত তরুনদের খোরাক জাগানোর মত বইয়ের।
অভাব সঠিক আকিদা,মানহাজ,মাসলাক ও আদর্শের প্রতি উদ্বুদ্ধুকারী বইয়ের।
অভাব দীন প্রতিষ্ঠায় ব্যাকুল তরুন-যুবাদের গাইড দেওয়ার মতো বইয়ের।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন এমন অভাব?এতদিনেও কেন ঘুচলো না এ অভাব?
———————————-
বইটি মোট আটটি অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে।
১.মর্মরে বাজে তাওহিদের আজান
২.দেখা হবে বিজয়ের মিছিলে
৩.আল- ওয়ালা ওয়াল বারা : প্রেক্ষিত নব্যক্রুসেড
৪.ভিসা : আলো আঁধারির খেলা (এখানে আলোচিত হয়েছে ভিসা ‘আমান’ কিনা)
৫.চারিদিকে রিদ্দাহর ফিতনা;নেই একজন আবু বকর
৬.রাসুলের হাতে প্রতিষ্ঠিত ইসলামি সমাজব্যবস্থার ভিত্তি
৭.বাইতুলমাল : পরিচিতি ও কার্যক্রম
৮.তাকফির : এক সংবেদনশীল অধ্যায়
———————
#নজর_কাড়া
#১
ওরা ওদের মিশনে সফল।
এত বেশি সফল যে,কিতাল-বিরোধিতায় মুসলমানদের সব ঘরানা ঐক্যবদ্ধ।
মাজহাবি বলেন বা লা- মাযহাবি,তাবলিগি বলেন বা পিরের মুরিদগোষ্ঠী,কওমি বলেন বা বেরেলবি,দেওবন্দি বলেন বা আলিয়াপন্থী,সুন্নি বলেন বা ওয়াহাবি,শিবির বলেন বা মাদখালি এ প্রসঙ্গ এলে সবাই একঘাটে পানি খায়।
পৃথিবীতে বর্তমান কালের একমাত্র ইজমায়ি মাসঅালা;যে ব্যাপারে ইজমা এতটাই সুদৃঢ় যে,কারোই কোনো মতবিরোধ নেই।
এদের বিপরীত সংখ্যাটা খুবই অপ্রতুল।।হাদিসেই তো বলা হয়েছে ‘শীঘ্রই ইসলাম গুরাবা হয়ে যাবে।’
হয়েছেও তাই,হাদিসের ঘোষণা মিথ্যা হওয়ারও তো জো নেই।
#২
সংসদ নির্বাচনে যারা ভোট দেয়,তারা তাদের সকলের সম্মিলিত অধিকার ‘হাকিমিয়্যাত’কে সন্তুষ্টচিত্তে তাদেরই নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে তুলে দেয়।
এরপর তাদের প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে বসে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে আইনকানুন ও বিধিবিধান প্রণয়ন করে।
সুতরাং ভোটদাতারা যতই সচ্চরিত্রবান লোককে ভোট প্রদান করুক,তারা আল্লাহ তা’আলার অধিকারকে প্রথমে নিজেদের জন্য সাব্যস্ত করে এবং তারপর সেই অধিকারকে অন্যকিছু লোকের হাতে তুলে দেয়।।নিঃসন্দেহে এটা স্পষ্ট শিরক।
কেউ যদি বলে ‘এটা সাক্ষ্য’ তাহলে তাকে বলা হবে,সাক্ষ্য তো বুঝলাম,কিন্তু কিসের সাক্ষ্য?
হাকিমিয়্যাত গায়রুল্লাহির জন্য সাব্যস্ত করার সাক্ষ্য?
সংসদ সদস্য নির্বাচনের মতো একটি শিরকি কর্মকাণ্ডকে যারা জিহাদ বলে চালিয়ে দেয় এবং মুসলিম জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করে,তাদের জিহাদ কি ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য নাকি ইসলাম ও কুফরের সংমিশ্রণে দীনে এলাহি প্রতিষ্ঠার জন্য তা আল্লাহই ভালো জানেন।
আল্লাহকে বাদ দিয়ে নিজেরা ‘হাকিম’ হওয়ার এই প্রতিযোগকে জিহাদ নাম দেওয়া সমীচীন,নাকি ক্রুসেডেরই পরিমার্জিত রুপ তা সচেতন পাঠকই ভালো বলতে পারবেন।
————————–
মোটকথা “মুক্ত প্রাণের হে সন্ধানী ” গ্রন্থে উঠে এসেছে ইসলাম ও কুফরের চিরন্তন সংঘাতের গভীরের আলোচনা।
উল্লেখিত বিষয়ে বাংলা ভাষায় এ বইটি হবে পথিকৃতের দাবিদার।
বইটি মুক্ত প্রাণের সন্ধানীদের সত্যপথের সন্ধান দিক।